অন/রোল-অফ বা রো-রো শিপ হলো বিশেষ এক ধরনের কার্গো জাহাজ, যেগুলো মোটরযান পরিবহন করতে পারে। ব্যক্তিগত গাড়ি, ট্রাক, বাস, ট্রেলার, সেমি-ট্রেলার, মোটরসাইকেল ইত্যাদি মোটরযান ক্রেনের সাহায্যে বোঝাই না করে সেগুলোকে চালিয়ে নিয়ে রো-রো জাহাজে তোলা এবং নামানো হয়।
আধুনিক যুগে মোটরযানের বাজার আঞ্চলিকতার গণ্ডি পেরিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বজুড়ে। ফলে বিশ্বের এক প্রান্তে উৎপাদিত মোটরগাড়ি পৌঁছে দিতে হচ্ছে অন্য কোনো প্রান্তে। এই কাজে সবচেয়ে বড় সমাধান হলো রো-রো জাহাজ। এছাড়া মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন কোনো দ্বীপের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ রক্ষার কাজেও রো-রো ফেরি ব্যবহার করা হয়। বড় বড় নদীতেও গাড়ি পারাপারে এই ধরনের ফেরি ব্যবহৃত হয়। রো-রো ভেসেল কার্গো শিপ, বার্জ, ক্রুজ ফেরি, ফেরি ইত্যাদি ধরনের হয়ে থাকে।
রো-রো জাহাজ বা ফেরিতে মোটরযান ওঠানো বা নামানো হয় র্যাম্পের ওপর দিয়ে চালিয়ে। এই র্যাম্প কখনো বিল্ট-ইন হয় অর্থাৎ জাহাজের সাথে সংযুক্ত থাকে। আবার কখনো শোর-বেজড র্যাম্প ব্যবহার করা হয়। এই ধরনের র্যাম্প ডকিং প্লাটফর্মের সঙ্গে যুক্ত থাকে। নদী পারাপার বা স্বল্প দূরত্বে চলাচলকারী রো-রো ফেরিগুলোর বেশিরভাগেরই বিল্ট-ইন র্যাম্প থাকে। এই র্যাম্পের মাধ্যমে গাড়িগুলোকে চালিয়ে ফেরি থেকে পন্টুনে নামানো হয়। বিল্ট-ইন র্যাম্প জাহাজের সামনে, পেছনে, দুই পাশে অথবা যেকোনো সুবিধাজনক অবস্থানে লাগানো থাকে। জাহাজ বা ফেরি চলাচলের সময় সেগুলো ওঠানো থাকে। সেগুলো ঘাটে বা বন্দরে ভিড়লে র্যাম্প নামিয়ে দেওয়া হয়।
শিপিং ইন্ডাস্ট্রিতে অন্যান্য কার্গো টনেজে পরিমাপ করা হলেও রো-রো কার্গো পরিমাপের একক হলো লেনস ইন মিটারস বা এলআইএম। এটি হিসাব করা হয় গাড়ির দৈর্ঘ্য, ডেক সংখ্যা ও প্রস্থ গুণ করে। ব্যক্তিগত গাড়ি পরিবহনকারী জাহাজগুলোয় (পিসিসি) বেশিরভাগ সময়েই কার্গো ক্যাপাসিটি পরিমাপ করা হয় আরটি অথবা আরটি৪৩ অথবা কার-ইকুইভ্যালেন্ট ইউনিটস (সিইইউ) এককে। আরটি৪৩ এককটি এসেছে ১৯৬৬ মডেলের টয়োটা করোনা কারের বডি মেজারমেন্টের ভিত্তিতে। এটি ছিল বিশ্বের সর্বপ্রথম বহুল উৎপাদিত গাড়ি, যেগুলো বাজারজাতের জন্য রো-রো জাহাজ ব্যবহার করা হয়েছিল।