বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের পরিপ্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। অন্যদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতি সামলাতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য–ঘাটতি কমিয়ে আনার পদক্ষেপ নেবে বাংলাদেশ।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশি পণ্যের ওপরও যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য শনিবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ বৈঠক শেষে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন সাংবাদিকদের এ কথাগুলো জানান। গতকাল সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ বৈঠক ডাকেন প্রধান উপদেষ্টা।
বাণিজ্য উপদেষ্টার ব্রিফিংয়ের সময় প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গাবিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
এই পাঁচজন এবং বাণিজ্য উপদেষ্টা ছাড়া বৈঠকে আরও অংশ নেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া, প্রধান উপদেষ্টার এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, অর্থসচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার এবং বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) চেয়ারম্যান জায়েদী সাত্তার।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘আমরা করণীয়গুলো বোঝার চেষ্টা করছি। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধির মাধ্যমে বাণিজ্য–ঘাটতি কমিয়ে আনার পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জন্য বড় সম্ভাবনার দুয়ারও খুলতে পারে।’
বাণিজ্য–ঘাটতি কমিয়ে আনার পদক্ষেপ প্রসঙ্গে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, প্রধান উপদেষ্টা সরাসরি ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা, শিল্পপণ্য, জ্বালানি পণ্য আমদানি করা হয়। শুল্কের বাইরে কিছু বাণিজ্য বাধা আছে। আশা করা হচ্ছে, সেগুলো দূর করার মাধ্যমে বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে। বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বৃদ্ধি একটা রাস্তা। তবে প্রয়োজনের অতিরিক্ত আমদানি করা যাবে না।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘আমাদের ধারণা, আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হব না। আমাদের থেকে শুল্ক কম পাকিস্তান ও ভারতের। কিন্তু আমাদের শিল্পের যে অবয়ব এবং আমাদের পণ্যের যে পরিপক্বতা, মনে হয় বড় সম্ভাবনার দুয়ার খুলে যেতে পারে বাংলাদেশের জন্য।’
শেখ বশিরউদ্দীন আরও বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমান গত ফেব্রুয়ারিতেই যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে দেশটির বাণিজ্য সংস্থা ইউএসটিআরসহ অন্য দপ্তরের সঙ্গে বৈঠক করেন। যেমন যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা আমদানি সহজ করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তখন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের প্রশংসা করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তখন বলা হয়েছে, দেশটিতে আমরাই সবার আগে গিয়েছি এবং গুরুত্ব দিয়েছি।’