স্বাধীনতা যুদ্ধে বিজয় অর্জনের ১০ দিন আগে ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ভুটান বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। স্বাধীনতার ৫০ বছর পর এই বিশেষ দিনটিতেই ভুটানের সঙ্গে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) সই করল বাংলাদেশ। বাংলাদেশের সঙ্গে এ ধরনের চুক্তি স্বাক্ষরের ক্ষেত্রেও প্রথম দেশ হলো আমাদের ঐতিহাসিক মিত্র এই দেশটি। সংগত কারণেই পিটিএ চুক্তি স্বাক্ষর এবং দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কের ৫০ বছর উদ্যাপন অনুষ্ঠানটিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরো একটি ‘ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ হিসেবে উল্লেখ করেন। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ডা. লোতে শেরিং অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এই বাণিজ্য চুক্তি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরো জোরদার করবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘আগামী ৫০ বছর আমাদের অঞ্চলের বাসিন্দাদের টেকসই উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধির সাক্ষী হবে।’’ তিনি এ সময় ঘোষণা দেন, বাংলাদেশের তিনটি বন্দর চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা ভুটানের জন্য উন্মুক্ত এবং তারা এগুলো ব্যবহার করতে পারবে। তিনি বলেন, ‘‘এটি (পিটিএ) বাস্তবায়নের জন্য দুই দেশের মধ্যে ট্রানজিট চুক্তির কথা চলছে। আশা করা হচ্ছে, আগামী তিন মাসের মধ্যে ট্রানজিট চুক্তি সম্পাদিত হবে।’’
পিটিএ স্বাক্ষরের চারদিন পর ১০ ডিসেম্বর ভুটানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এ কে এম শহীদুল করিম বলেন, ‘‘ট্রানজিট চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে এবং এখন এটি বাস্তবায়নের জন্য প্রটোকল নিয়ে আলোচনা চলছে।’’
এই চুক্তির অধীনে বাংলাদেশের স্থলবন্দর যেমন বুড়িমারি থেকে ভুটানের ফুলসিলিং পর্যন্ত, বা অন্য যেকোনো বন্দর থেকে বাংলাদেশ, ভুটান ও ভারতের ট্রাকে পণ্য পরিবহন হবে বলে তিনি জানান।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘‘বাংলাদেশের ট্রাক ভুটান সীমান্ত পর্যন্ত যেতে পারবে এবং ভুটানের ট্রাক বাংলাদেশের সীমান্ত পর্যন্ত আসতে পারবে। সীমান্তে পৌঁছানোর পর ট্রান্সশিপমেন্ট হবে।’’ তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশ-ভারত-নেপালের মধ্যে বিআইএন মোটরভহিকল চুক্তি আছে। এই চুক্তির অধীনে বাংলাদেশের ট্রাক ভারতে চলাচল করতে পারবে। আবার ভুটান ও ভারতের মধ্যে মোটরযান চলাচল চুক্তি রয়েছে, যার অধীনে ভুটানের ট্রাক ভারতে চলাচল করতে পারবে।’’