আইএমও কাউন্সিলে বাংলাদেশকে ভোট দিতে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর আহ্বান

লন্ডনে আইএমও’র নির্বাচনী ক্যাম্পেইনে বক্তব্য রাখছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী

আন্তর্জাতিক নৌ সংস্থার (আইএমও) কাউন্সিলে বাংলাদেশকে ‘সি’ ক্যাটাগরিতে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে আইএমও’র সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি। মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় লন্ডনে আইএমও’র নির্বাচনী ক্যাম্পেইন উপলক্ষে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি) মধ্যে বাংলাদেশ এ বছর একমাত্র প্রার্থী দেশ। বাংলাদেশ ‘সি’ ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত হলে এলডিসি, ছোট দ্বীপভিত্তিক উন্নয়নশীল দেশ, ল্যান্ডলকড উন্নয়নশীল দেশগুলোর স্বার্থ প্রসারিত করবে। আইএমওতে বাংলাদেশ উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে সেতুবন্ধ হিসেবে কাজ করবে। সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সাথে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট এবং সহযোগিতার মাধ্যমে নিরাপদ এবং পরিবেশগতভাবে টেকসই শিপিং এবং সামুদ্রিক বাণিজ্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সচেষ্ট থাকবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ১৯৭৬ সালে আইএমও’র সদস্যপদ লাভ করে এবং ১৯৮১ থেকে ১৯৮৭ সালের মধ্যে ‘সি’ ক্যাটাগরি এবং ২০০২ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত ‘বি’ ক্যাটাগরিতে আইএমও’র কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে। দীর্ঘদিন পর আইএমও কাউন্সিলে আমাদের অংশগ্রহণ বাংলাদেশকে সামুদ্রিক নিরাপত্তা, পরিবেশগত সুরক্ষা এবং শিপিং সেক্টরে দক্ষতা নিশ্চিত করতে আইএমও’র মিশনে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে শুধু সাহায্য করবেনা, আইএমওতে নেতৃত্বের ভূমিকাও নিতে পারবে।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের চাহিদা মিটাতে বন্দরগুলোর ভবনসহ অবকাঠামো উন্নয়ন, নতুন জেটি ও টার্মিনাল নির্মাণ, গভীর সমুদ্র বন্দর, পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী নদীর নীচে টানেল নির্মাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাজেটে যথেষ্ট বরাদ্দ রেখেছেন। নতুন এ সমস্ত অবকাঠামো নির্মাণ প্রতিবেশী ল্যান্ডলকড দেশগুলোর ব্যবসা বাণিজ্য প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বিশেষ করে আমাদের দু’টি বড় সমুদ্র বন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে নৌবাণিজ্য সম্প্রসারিত হবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ মেরিটাইম জাতি হিসেবে সবসময় সক্রিয়। আমরা বঙ্গোপসাগরের বৃহৎ স্টেকহোল্ডার। বিশ্বের বৃহৎ ডেল্টা হিসেবে বাংলাদেশ এখন মেরিটাইম সেক্টরের সমৃদ্ধি এবং টেকসই ব্লু ইকোনমির প্রবৃদ্ধির উপর ফোকাস করছে। সমুদ্রপথে বাণিজ্য ও পরিবহন কার্যক্রমে বাংলাদেশের আগ্রহ রয়েছে। কারণ বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ৯৫ ভাগ সমুদ্রপথে হয়ে থাকে।

তিনি বলেন, সীফেয়ারার্স এবং অন্যান্য কর্মকর্তাদের শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণের ওপর সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। ১৪টি মেরিটাইম একাডেমি ও ইন্সটিটিউটের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বের নয়টি মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একটি।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এ বছর বাংলাদেশের জন্য একটি বিশেষ বছর। এ বছর আমরা বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী পালন করছি। বঙ্গবন্ধু আমাদেরকে মেরিটাইম ভিশন দিয়ে গেছেন। তিনি ১৯৭৪ সালে মেরিটাইম জোনস অ্যাক্ট এবং বাংলাদেশের প্রথম মেরিন একাডেমি দিয়ে গেছেন।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী, আইএমওতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি সাঈদা মুনা তাসনীম, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর আবু জাফর মো. জালাল উদ্দিন, আইএমও’র সদস্য রাষ্ট্রগুলোর রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারগণ উপস্থিত ছিলেন।

১০ ডিসেম্বর আইএমও’র কাউন্সিলে ‘সি’ ক্যাটাগরির নির্বাচন হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here